তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার কারণ

তারিখ অনুযায়ী মাসিক হওয়া একটি স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু যদি তারিখ অনুযায়ী নিয়মিত মাসিক না হয় তাহলে কিছু কারণ বা সমস্যা শরীরে হয়ে থাকতে পারে। যেগুলো নিম্নোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানা যাবে।

মাসিক কি?

মাসিক হল একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যা প্রতি মাসে একজন নারীর জরায়ু থেকে ঋতুস্রাবের মাধ্যমে রক্ত এবং শ্লেষ্মা নিঃসরণ হয়। এই প্রক্রিয়াটি প্রজননশীল বয়সী (প্রায় 10 থেকে 50 বছর বয়স) মহিলাদের মধ্যে ঘটে।

মাসিক চক্রের শুরুতে, ডিম্বাশয় থেকে একটি ডিম্বাণু নিঃসৃত হয়। এই ডিম্বাণুটি শুক্রাণুর সাথে মিলিত হলে গর্ভাবস্থা ঘটে। যদি ডিম্বাণুটি নিষিক্ত না হয়, তাহলে এটি গর্ভাশয়ে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। এই ক্ষয়প্রাপ্ত ডিম্বাণু এবং জরায়ুর ভেতরের আস্তরণের অংশগুলি রক্ত এবং শ্লেষ্মা আকারে মাসিকের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে।

মাসিক সাধারণত 21 থেকে 35 দিনের মধ্যে হয় এবং 3 থেকে 7 দিন স্থায়ী হয়। মাসিকের সময় রক্তপাতের পরিমাণ সাধারণত 2 থেকে 6 আউন্স (50 থেকে 170 মিলি) হয়।

মাসিক নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি

মাসিক নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে, যেমন:

  • জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল
  • ইনজেকশন
  • ইনসার্ট
  • আইইউডি
  • স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

মাসিক নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি নির্বাচনের সময় একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার কারণ

তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ কারণগুলি হল:

  • গর্ভাবস্থা: যদি একজন নারী গর্ভবতী হন তবে তার মাসিক বন্ধ হয়ে যাবে।
  • স্তন্যদান: স্তন্যদানকারী মহিলাদের মাসিক শুরু হতে সাধারণত 6 মাস থেকে 1 বছর সময় লাগে।
  • মেনোপজ: মেনোপজের কাছাকাছি সময়ে মহিলাদের মাসিক অনিয়মিত হতে পারে এবং পরে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
  • হরমোনজনিত সমস্যা: পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস), থাইরয়েডের সমস্যা, অ্যাড্রেনাল সমস্যা ইত্যাদি হরমোনজনিত সমস্যার কারণে মাসিক অনিয়মিত হতে পারে।
  • ওজন পরিবর্তন: ওজন খুব বেশি বা খুব কম হলে মাসিক অনিয়মিত হতে পারে।
  • মানসিক চাপ: মানসিক চাপের কারণেও মাসিক অনিয়মিত হতে পারে।
  • ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে মাসিক অনিয়মিত হতে পারে।
  • অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা: কিছু অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেও মাসিক অনিয়মিত হতে পারে, যেমন- ক্যান্সার, যকৃতের রোগ, কিডনির রোগ ইত্যাদি।

যদি আপনার মাসিক তারিখ অনুযায়ী না হয় তবে প্রথমেই নিশ্চিত করুন যে আপনি গর্ভবতী নন। যদি আপনি গর্ভবতী না হন তবে অন্যান্য সম্ভাব্য কারণগুলি বিবেচনা করতে হবে। আপনার মাসিক অনিয়মিত হওয়ার কারণ নির্ণয়ের জন্য একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

মাসিক অনিয়মিত হওয়ার কিছু লক্ষণ ও উপসর্গ

মাসিক অনিয়মিত হওয়ার কিছু লক্ষণ ও উপসর্গ হল:

  • মাসিকের ব্যবধানের পরিবর্তন (21 দিনের কম বা 35 দিনের বেশি)
  • মাসিকের রক্তপাতের পরিমাণের পরিবর্তন (অতিরিক্ত কম বা অতিরিক্ত বেশি)
  • মাসিকের রক্তপাতের সময়কালের পরিবর্তন (3 দিনের কম বা 7 দিনের বেশি)
  • মাসিকের ব্যথার পরিবর্তন

যদি আপনার মাসিক অনিয়মিত হওয়ার সাথে সাথে এই লক্ষণ ও উপসর্গগুলি দেখা দেয় তবে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

আরো পড়ুনঃ

Leave a Comment