ফোবিয়া কাকে বলে? অহেতুক ভীতি বা ফোবিয়া রোগ | চিকিৎসা

ফোবিয়া কাকে বলে?

যে বস্তু, প্রাণী, অবস্থা অন্যের কাছে স্বাভাবিক মনে হয় এবং তাদের কোনো ভীতির সৃষ্টি করে না বা ভীতির সৃষ্টি হলেও তা নিয়মতান্ত্রিক মাত্রায় থাকে; রোগী একই বস্তু, প্রাণী বা অবস্থায় অতি ভীত হয় এবং সেই সকল বস্তু প্রাণী বা অবস্থাকে এড়িয়ে চলে। এই পরিস্থিতিকে বলা হয় ফোবিয়া।

অহেতুক ভীতি বা ফোবিয়া রোগ

এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা একা একা দূরে কোথাও যেতে ভয় পায়। কোলাহলময় জায়গায় যেতে ভয় পায়। তারা উঁচু জায়গায় উঠতে ভয় পায়। কতক কতক ক্ষেত্রে কিছু জন্তু যেমন – কুকুর, তেলাপোকা, কেঁচো ইত্যাদিকেও ভয় পায়। কেউ কেউ সামাজিক পরিবেশ, যে পরিবেশে তাকে কিছু কিছু লোকের মুখোমুখি হতে হয়, যেমন – বক্তৃতা অনুষ্ঠান, নামাজের জামাত ইত্যাদিতে যেতে সে ভয় পায়।

অনেকে রোগভীতি যেমন- হার্ট ডিজিজ, ক্যান্সার। এইডস ইত্যাদিতে আক্রান্ত বলে মনে করে ভয় পায়। এই রোগে আক্রান্ত রোগীরা নিজেও জানে ও বিশ্বাস করে যে, এই ভয় অহেতুক ভয়, কোনো কারণ ছাড়া। তথাপি ভয়ের বস্তু বা স্থানের কাছে গেলে তাদের টেনশন বাড়ে। ফলে ওই স্থান বা বস্তুকে তারা এড়িয়ে চলে।

ফোবিয়ার আরেকটি অংশ মৃত্যুভীতি। এই রোগে আক্রান্ত রোগীরা কেউ মারা গেছে শুনলে অত্যন্ত ভয় পায়। অনেকে জানাজার নামাজে শরিক হয় না এমন কি খবরের কাগজে মৃত্যুর সংবাদগুলো পড়তেও ভয় পায়। ফোবিয়া বা অহেতুক ভীতি এবং সাধারণ ভয় এর মধ্যে কতকগুলো স্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে। যেমন – তেলাপোকা, টিকটিকি, সাপ, বিচ্ছু এগুলো দেখলে আমরা ভীত হয়ে পড়ি। এগুলো সাধারণ ভয়।

ঈশান কোণে কালো মেঘ, বজ্রপাতের শব্দ, গুলির শব্দ, বোমার শব্দ, সমুদ্রের গর্জন ইত্যাদি কতকগুলো নিরেট বস্তুকে ভয় সাধারণ ভয়ের মধ্যে পড়ে। আর অহেতুক ভীতি হচ্ছে যতটুকু ভয় পাওয়ার প্রয়োজন তার চেয়ে অনেক বেশি ভীত হয়ে পড়া। এটা নিরেট কোনো বস্তু বা প্রাণী থেকেও উৎপত্তি হতে পারে কিংবা কাল্পনিকভাবেও উৎপত্তি হতে পারে। সাধারণ ভয়ে ভীত কোনো ব্যক্তি তার নির্দিষ্ট কাজ কখনোই এড়িয়ে চলেন না। তার কাজ তিনি সম্পাদন করেন। কিন্তু অহেতুক ভয়ে ভীত ব্যক্তি তার কাজ সম্পাদন থেকে বিরত থাকেন, ফলে কাজে ব্যাঘাত ঘটে। 

উদাহরণস্বরূপ মৃত্যু। এটি একটি জাগতিক সাধারণ ঘটনা। কিন্তু অহেতুক ভয় বা ফোবিয়া রোগে যিনি আক্রান্ত তিনি মৃত্যুর কথা পড়লে তিনি অতি ভীত হয়ে পড়েন। ফলে তার মধ্যে টেনশন রোগের উপসর্গ পাওয়া যায়। অনেক সময় রোগী এত ভীত হয়ে যান যে তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। আক্রান্ত ব্যক্তি শারীরিকভাবে সুস্থ্য থাকে বিধায় অনেকে এই রোগের উপসর্গগুলোকে ভান বা অভিনয় মনে করে থাকেন।

ফোবিয়া রোগের চিকিৎসা

যে বস্তুকে যত ভয় পাবেন তাকে মোকাবেলা করুন। তাকে এড়িয়ে চলবেন না। সরাসরিভাবে প্রথমে অত্যন্ত টেনশনের সৃষ্টি হবে আস্তে আস্তে তা কমে যাবে। ঔষধ দ্বারাও এর চিকিৎসা সম্ভব। বিভিন্ন সাইকোলজিক্যাল চিকিৎসাও এর সাহায্যকারী হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ

Leave a Comment