গনোরিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

গনোরিয়া রোগের কি?

Neisseria gonorrhoeae প্রজাতিভুক্ত ব্যাকটেরিয়ামের সংক্রমণে সৃষ্ট যৌনবাহিত রোগকে গনোরিয়া বলে। N. gonorrhoeae নারীর জনন নালি (সারভিক্স, জরায়ু, ফেলোপিয়ান নালিসহ) এবং নারী ও পুরুষের ইউরেথ্রার মিউকাস ঝিল্লিতে সংক্রমণ ঘটায়। মুখ, গলা, চোখ ও পায়ুর মিউকাস ঝিল্লিও এ ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে আক্রান্ত হয়। গর্ভকালীন জটিলতা ছাড়াও নারী-পুরুষ উভয়ে বন্ধ্যা-বন্ধ্য হয়ে যেতে পারে।

গনোরিয়া রোগের লক্ষণ

গনোরিয়া রোগের লক্ষণ

গনোরিয়া আক্রান্ত অনেক ব্যক্তির দেহে তেমন স্পষ্ট লক্ষণ প্রকাশ পায় না বলে এটি ব্যাপক বিস্তৃত যৌনবাহিত অসুখ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

নারীদের গনোরিয়ার লক্ষণ

  • উদরীয় ব্যথা
  • দুই রজঃচক্রের মধ্যবর্তী সময়ে প্রচুর যোনিস্রাব ও রক্তপাত
  • অনিয়মিত রজঃচক্র
  • জ্বর ও গায়ে ফুসকুড়ি
  • কষ্টদায়ক যৌনমিলন
  • কষ্টদায়ক মূত্রত্যাগ
  • যোনিদেশ ফুলে যাওয়া
  • স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মূত্রত্যাগের প্রবণতা
  • হলদে বা হলদে-সবুজ যোনিস্রাব
  • অস্থিসন্ধিতে ব্যথা প্রভৃতি।

পুরুষের গনোরিয়ার লক্ষণ

  • প্রস্রাবে জ্বালা-পোড়া-ব্যথা অনুভব
  • প্রস্রাবের পর চাপ দিলে আঠার মতো পুঁজ বের হয়
  • স্বাভাবিকের চেয়ে বেশিবার মূত্রত্যাগের ইচ্ছা
  • শুক্রাশয় ও অন্ডথলিতে ব্যথা প্রভৃতি।

পুরুষে এসব লক্ষণগুলো শুধু সকালে, তাও হালকা অনুভূত হয় বলে অনেকে বুঝতেই পারে না যে, সে গনোরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে।

গনোরিয়া আক্রান্ত পুরুষ ও নারী উভয় দেহে মলাশয় থেকে স্রাব, পায়ুপথে চুলকানি, ক্ষত, রক্তপাত, মলত্যাগে প্রচন্ড ব্যথা প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দেয়।

তাছাড়া, গলবিল সংক্রমিত হলে গলাভাঙ্গা-র উদ্ভব ঘটে।

সংক্রমণের উপায়

যৌন মিলনের সময় আক্রান্ত দেহের বহিযৌনাঙ্গ, মুখ ও পায়ু থেকে সংক্রমণ ঘটে। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময়ও আক্রান্ত মাতৃদেহ থেকে এ রোগের সংক্রমণ ঘটতে পারে। যে ব্যক্তি এক সময় গনোরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসায় সেরে উঠেছে এমন ব্যক্তি গনোরিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে পুনর্মিলন ঘটালে সেও পুনঃসংক্রমিত হতে পারে।

গনোরিয়া রোগের প্রতিকার

সামান্য সতর্কতা ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা সম্বন্ধে জ্ঞান রাখলে গনোরিয়ার মতো মারাত্মক যৌনবাহিত রোগ থেকে নিজেকে ও ভবিষ্যৎ বংশধরকে নিরাপত্তা দেওয়া খুব সহজ। এ জন্যে যা করা দরকার তা হচ্ছেঃ

১) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে কম বয়সী ও গর্ভবতী নারীদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করাতে হবে।
২) যৌনসঙ্গী নির্বাচনে অবশ্যই সতর্ক ও নিশ্চিত থাকতে হবে।
৩) নিরোগ না হওয়া পর্যন্ত মিলনে প্রবৃত্ত না হওয়া।
৪) প্রতিবার মিলনকালে কনডম ব্যবহার করা ইত্যাদি।

আরো পড়ুনঃ

Leave a Comment